বছর চল্লিশেক আগে ইংল্যান্ডে এক প্রশিক্ষণাবাসে একজন সুদর্শন ফিলিস্তিনি যুবকের সাথে দেখা। সবাই তখন গেছে নাচঘরে; তিনি যান নি। তিনি আমাকে তার ঘরে নিয়ে গেলেন। জর্দানে বসবাসরত তার স্ত্রী তাকে চিঠি লিখেছেন, ”যারা আমাদের দেশটাকে অন্যদের হাতে তুলে দিয়েছে সেই বিলেতী মেয়েদের সাথে তুমি নাচো কি করে!” সেই থেকে তিনি আর নাচতে যান না। তিনি এবং তার শিক্ষয়িত্রী স্ত্রী জর্দানে উদ্বাস্তু। ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ নূতন নয়। উচ্ছেদ, দখল, আবার উচ্ছেদ এই চক্র চলছে অবিরাম; আজ নয়, প্রায় ছয় হাজার বছর ধরে। ছ’ হাজার বছর আগে দেশটার নাম ছিল কনান, তার পর প্যালেস্টাইন, তার পর ফিলিস্তিন, এখন ইসরায়েল। প্রায় ছ’ হাজার বছর আগে নূহ (আ:)এর পুত্র ছিলেন হাম। হামের এক পুত্র কনান। কনানের নাম অনুসারে ভূমধ্য সাগরের পাড়ে সেই দেশ কনান দেশ নামে পরিচিত (বাইবেল আদিপুস্তক ১০.১- ২০)। নূহের আর এক পূত্র শেমের বংশধর হলেন আব্রাহাম (ইব্রাহিম আ:)। আব্রাহাম ছিলেন যাযাবর প্রকৃতির, তিনি একেশ্বরবাদী, একান্তভাবে এক-ঈশ্বরে সমর্পিত । বসবাসের জন্য আব্রাহামকে ইশ্বর একটি দেশের প্রতিশ্রুতি দেন এবং সেই দেশে যেতে বলেন। আব্রাহাম কনান দেশে আসেন। এই কনান দেশ ও পলেস্টিয়া দেশই বর্তমান ফিলিস্তিন অঞ্চল। কনানের পশ্চিমে ভূমধ্যসাগর সাগর, পূর্বে জর্দন নদী, উত্তরে দামেস্ক, দক্ষিণে মিসর। কনানে দুর্ভিক্ষ হওয়ায় আব্রাহাম মিসরে যাত্রা করলেন, মিসর থেকে ফিরে আবার এই কনান দেশে তিনি বসতি করেন। ঈশ্বর আব্রাহামকে প্রতিশ্রুতি দিলেন, সেই বিস্তৃত অঞ্চল (কনান) তিনি যুগে যুগে আব্রাহাম ও তার বংশধরগণকে দেবেন। আব্রাহামের ভ্রাতা লোট (লূত আ:) পার্শ্ববর্তী রাজাগণের দ্বারা অপহৃত হওয়ায় আব্রাহামের সাথে তাদের যুদ্ধ হয়; আব্রাহাম তাদেরকে দামেস্ক অবধি তাড়িয়ে দেন (বাইবেল)। কনান বা পলেস্টিয়া (ফিলিস্তিন) দেশ নিয়ে যুদ্ধের শেষ নেই।
আব্রাহাম এর পুত্র ইসহাক, ইসহাকের পুত্র ইয়াকুব (যাকোব) যার আর এক নাম ইসরায়েল। ইসরায়েলের বারো জন পুত্রের এক পুত্র ইউসুফ (আঃ) (জোসেফ) ঘটনটচক্রে মিসরে দায়িত্বশীল পদ প্রাপ্ত হয়েছিলেন, তিনি ইসরায়েল এবং পরিবারের সকলকে কনান থেকে মিসরে আনিয়ে নেন। ইসরায়েলের বংশধরেরা নিজেদের বনি-ইসরায়েল বা ইসরায়েলীয় বলে পরিচয় দেন। কয়েক শতাব্দীর মধ্যে এই ইসরায়েলীয়রা মিসরীয়দের শ্রমদাসে পরিণত হয়। এই শ্রমদাস গোত্রেই জন্ম নেন মুসা (আঃ) (মোজেস বা মোশি)। মুসা (আঃ) ফেরাউনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে ইসরায়েলীয়দের মুক্ত করে নিয়ে আসেন। মুক্ত এই ইসরায়েলীয়রা তাদের পূর্ব পুরুষ আব্রাহাম, ইসহাক ও ইসরায়েলের কনান সীমান্তে এসে উপস্থিত হয় এবং কনান বা পলেস্টীয়া (ফিলিস্তিন) দেশের পূর্ব প্রান্তে জর্দন নদীর তীরে শিবির স্থাপন করে (বাইবেল গণনাপুস্তক ২১); তারা কনানসংলগ্ন মিদিয়ন দখল করে, সেখানকার পুরুষদের বধ করে, নগর জ¦ালিয়ে দেয়। এরপর, ”সদাপ্রভু (ঈশ্বর) মোশিকে কহিলেন, তুমি ইসরায়েল-সন্তানগণকে কহ, তোমরা যর্দ্দন পার হইয়া কনান দেশে উপস্থিত হইবে, তখন তোমাদের সম্মুখ হইতে সেই দেশ নিবাসী সকলকে অধিকারচ্যুত করিবে, এবং তাহাদের সমস্ত প্রতিমা ভগ্ন করিবে, সমস্ত ছাঁচে ঢালা বিগ্রহ নষ্ট করিবে, সমস্ত উচ্চস্থলী উচ্ছিন্ন করিবে। তোমরা সেই দেশ অধিকার করিয়া তাহার মধ্যে বাস করিবে” (বাইবেল গণনাপুস্তক ৩৩.৫০-৫৩)। ফিলিস্তিনে রক্তক্ষরণ আবার শুরু হয় এবং তা ইসরায়েলদের দ্বারা। প্রায় চারশত বৎসর ধরে অসংখ্যবার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ইসরায়েল-সন্তানগণ পুরা কনান অধিকার করে (বাইবেল ২ শমুয়েল ৮); তবু সংঘাত শেষ হয় নি, অহরহ সংঘাত চলেছে। এই ইসরায়েলের বংশধারায় হযরত দায়ুদ (আ:)কনানে জেরুশালেম নগরীর গোড়াপত্তন করেন, তার মৃত্যুর পর তার পুত্র সলোমন (সুলায়মান আ:) জেরুশালেমে ঈশ্ব^রের গৃহ (আল্লার ঘর) নির্মাণ করলেন; ”হাটু পাতিয়া স্বর্গের দিকে অঞ্জলি বিস্তার করিলেন এবং বেিললেন হে সদাপ্রভু . . তোমার দাস শুধু ইস্রায়েল গোষ্ঠী নয়, কোনো বিদেশী যখন . . এই গৃহের অভিমুখে প্রার্থনা করিবে, তখন তুমি স্বর্গ গইতে তাহা শুনিও এবং যা কিছু প্রার্থনা করিবে, তদনুসারে করিও . . যেন পৃথিবীর সমস্ত জাতি তোমার নাম জ্ঞাত হয়, তোমাকে ভয় করে এবং জানিতে পায় যে এই গৃহের উপরে তোমারই নাম কীর্ত্তিত (বাইবেল, ২ বংশাবলি ৩.১, ৬.১৩, ৬.৩২-৩৩) । মসজিদুল আকসা বলতে জেরুশালেমে হজরত সুলায়মান (আঃ) নির্মিত এই ’আল্লার ঘর’ বা তারই পাশে নির্মিত ঘরকেই বুঝায়।
সলোমনের মৃত্যুর কিছু কাল পর এ্যাসসিরয়িগণ ফিলিস্তিনের উত্তরাংশ জয় করে। এর পর বাবিল-রাজ জেরুশালেমের লোক ও বীরগণকে বন্দী করে নিয়ে যায়, ”সদাপ্রভুর (ঈশ্বরের) গৃহের সম্পদ ধ্বংস” করে (খ্রীষ্টপূর্ব আনুমানিক ৫৮৬ সনে)১। খৃষ্টপূর্ব ৬৩ অব্দে রোমানগণ ফিলিস্তিন অধিকার করে।১ রোমান অধিকৃত প্যালেস্টাইনের ইহুদী সমাজেই যিশুখ্রীষ্ট জন্মগ্রহণ করেন। জেরুশালেমেই তাকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়। ৩৯৫ খৃস্টাব্দে প্যালেস্টাইন বাইজেন্টাইন খ্রীস্টান শাসনে চলে যায়। তখন খ্রীস্টান ইহুদী সংঘাত হয়।
মুহম্মদ (সঃ) ধরায় আসেন ৫৭০ খৃস্টাব্দে। মুহম্মদ (স:) প্রবর্তিত ইসলাম ধর্ম কোনো নতুন ধর্ম নয়। বলা হোয়েছে ’ইব্রাহিমের ধর্মাদর্শ’ (কুরআন ২২.৭৮); বলা হয়েছে ’তার চেয়ে ভাল ধর্ম আর কার আছে যে আল্লার কাছে আত্মসমর্পণ করে, ভাল কাজ করে এবং ইব্রাহিমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ করে!’ (কুরআন (৪.১২৫)। হযরত মুহম্মদ (স:) ছিলেন হযরত ইব্রাহিমের পুত্র হযরত ইসমাইল (আ:)এর বংশধর। হযরত ইব্রাহিম তার পুত্র ইসমাইল (আ:)কে সাথে নিয়ে কাবা ঘর পূনর্নির্মাণ করেন। ইব্রাহিম (আ:) ফিলিস্তিন অঞ্চলে থেকেছেন। তার বংশধর ইসরায়েল, দাউদ, সুলায়মান, ঈসা (আ:) এই ফিলিস্তিনেই বসবাস করেছেন। মুসলমানদের প্রথম কিবলা ফিলিস্তিনের জেরুশালেমের আল আকসা মসজিদ। কুরআনে বর্ণিত হয়েছে এই আল আকসার চতুর্পার্শ^ আল্লাহ্ বরকতময় করেছেন (কুরআন ১৭.১)। রসুলুল্লাহ্ (স:) বলেছেন মক্কার কাবা শরিফ, মদিনার মসজিদুন-নববী এবং জেরুজালেমের মসজিদুল আকসায় নামাজ পড়লে পূণ্য অধিক। জেরুশালেম ইহুদিদের জন্য পবিত্র ভুমি, খ্রীস্টানদের জন্য পবিত্র ভুমি, মুসলমানদের জন্যও পবিত্র ভুমি।
মুহম্মদ (সঃ) যখন ধরায় আসেন তখন জেরুশালেম ছিল খ্রীস্টানদের অধিকারে। হযরত উমর (রা:)এর (৬৩৭খৃ:) ক্রীস্টানদের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন। চুক্তিতে মুসলিমগণ আশ্বাস দেন যে, জেরুশালেম বাসিন্দাদের জানমাল, গীর্জা ও ক্রসের পূর্ণ হেফাজত করা হবে, কোনো গীর্জাকে ধ্বংস করা হবে না; ইসলাম ধর্ম চাপিয়ে দেয়া হবে না তবে জেরুশালেম বাসীগণ জিযিয়া প্রদান করবে২। (মুসলিম কর্তৃক যাকাত প্রদান যেমন বাধ্যতামূলক, অমুসলিমগণ কর্তৃক জিযিয়া প্রদানও বাধ্যতামূলক।) মুসলিম অধিকারে যাবার পর হযরত সুলেমানের মসজিদের সংলগ্ন এলকায় নতুন করে আল আকসা মসজিদ নির্মাণ করা হয়।
জেরুশালেম মুসলিম অধিকারে চলে যাওয়াকে বিশ্বের খ্রীস্টানগণ মেনে নিতে পারে নি। ১০৯৫ খৃস্টাব্দে ফ্রান্স, জার্মানী, ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া প্রভৃতি বিভিন্ন দেশ থেকে ধর্মযোদ্ধাদের বিপূল বাহিনী মুসলিম অধিকার থেকে জেরুশালেমকে উদ্ধারের জন্য যুদ্ধ যাত্রা করে। এই যাত্রাপথে খ্রীস্টান ধর্মযোদ্ধাগণ জার্মানীতে ইহুদীদেরর হত্যা করে কারণ ইহুদীরা জেরুশালেমে যীশুখ্রীস্টকে ক্রুশবিদ্ধ করেছিল।৩ এই ক্রুসেডে বা প্রথম ধর্মযুদ্ধে জেরুশালেম রক্ষা করার জন্য ষাট হাজার মুসলিম প্রাণ দেয়, মসজিদুল আকসার ছাদে আশ্রয় গ্রহণকারী মুসলিমদেরকেও হত্যা করা হয়।৪ ১০৯৯ সালে জেরুশালেম খ্রীস্টান অধিকারে চলে যায়। তিন শত বৎসর পরে ১১৮৭ খৃস্টাব্দে গাজী সালাউদ্দীনের নেতৃত্বে মুসলিমগণ জেরুশালেম পুনরায় দখল করেন। উভয় পক্ষে রক্তপাত হয়। এরপর খৃস্টানরা আরো নিষ্ফল আক্রমণ করে, আরো রক্তপাত হয়। তবে ফিলিস্তিন তুর্কী সাম্রাজ্যের প্রদেশ হিসেবেই থাকে।
প্যালেস্টাইন এক সময় বনী ইসরায়েল বা ইহুদীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, এসিরিয় আক্রমণ, বাবিলের নির্যাতন, খৃস্টান অধিগ্রহণ ইত্যাদি কারণে ইহুদীরা সেই প্যালেস্টাইন থেকে দেশ ত্যাগ করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সব দেশে তারা বিদেশী হিসেবে গণ্য হয়, সব দেশে তারা অবাঞ্ছিত, নির্যাতিত হয়। ইহুদীরা অনুভব করে যে তাদের নিজস্ব একটা আবাসভূমি এবং নিজস্ব রাষ্ট্র থাকা প্রয়োজেন। কোথায় হতে পারে সে রাষ্ট্র? প্রথম পছন্দ প্যালেস্টাইন। কারণ, প্যালেস্টাইন তাদের পিতৃপুরুষগণের আবাসভুমি ছিল। দ্বিতীয়ত: প্যালেস্টাইনের ভৌগলিক অবস্থান এমন যে একদিকে ই্উরোপ, একদিকে আফ্রিকা, একদিকে এশিয়া। ১৮৯৭ সালে সুইজারল্যান্ডের ব্যাসেল শহরে ইহুদীদের একটি সম্মেলন হয়। সেখানে নিরূপণ হয় যে জেরুশালেমের ’জায়ন’ পাহাড়ের পাদদেশে এই রাষ্ট্রের সুত্রপাত হতে পারে। রাষ্ট্র গঠনের অবিপ্রায়ে এর অনেক আগে থেকেই ইহুদীরা প্যালেস্টাইনে জমি ক্রয় শুরু করে৫; বসতি ও কৃষি খামার স্থাপন করতে থাকে৬। ১৮৮২ থেকে ১৯০৩ পর্যন্ত সময়ে প্রায় ত্রিশ হাজার ইহুদি প্যালেস্টাইনে প্রবেশ করে। ১৯১৪ সাল নাগাদ প্যালেস্টাইনে ইহুদীর সংখ্যা দাড়ায় প্রায় নব্বই হাজার, অনেক গুলি কৃষি বসতি স্থাপিত হয় – বিভিন্ন দেশের ইহুদী ধনাঢ্য ব্যক্তিগণ এতে সহায়তা করেন। ১৯৩৩ সাল নাগাদ প্যালেস্টাইনে বসতি স্থাপনকারী ইহুদীর সংখ্যা দাড়ায় দুই লক্ষ আটত্রিশ হাজার। এ সময় প্যালেস্টাইন ছিল তুর্কী সুলতানের (তুর্কী অটোমান সাম্রাজ্য বা উসমানীয় খেলাফতের) অধীন। প্যালেস্টাইনে ইহুদী বসতি ও ইহুদী প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে ইহুদীগণ তুর্কী সুলতানকে অর্থ দেবার প্রস্তাব করে। কিন্তু সুলতান সম্মত হন নি৬, ইহুদী বসতি বিস্তার প্রতিরোধেরও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেন নি ।
কয়েক শতাব্দী ধরে তুর্কী অটোম্যান সাম্রাজ্য এশিয়া ও ইউরোপের এক বিস্তীর্ন অঞ্চল শাসন করে। ১৯১২ সালে বুলগেরিয়া, সার্বিয়া, গ্রীস ও মন্টেনিগ্রো অটোম্যান সাম্রাজ্য থেকে মুক্তির জন্য তুর্কীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ১৯১৪ খৃস্টাব্দে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তুরস্ক জার্মানীর পক্ষ অবলম্বন করে; বিপক্ষে ছিল ইংলন্ড ফ্রান্স রাশিয়া। এই সময়ে তুর্কী সাম্রাজ্যের বিভিন্ন ভূখন্ড সিরিয়া, জর্দান, ফিলিস্তিন প্রভৃতি অঞ্চল তুর্কীর অধীনতা থেকে মুক্ত হতে চায়। বৃটিশ সরকার একে স্বাগত জানায়। ফলে তুর্কীর পরাজয়ের পথ সুগম হয়। যুেদ্ধ তুরস্কের পরাজয় হলে তুর্কী সাম্রাজ্য বা খেলাফতের অনেক এলাকা রাশিয়া ফ্রান্স ও ইংলন্ড নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। জর্দন নদীর পশ্চিমে অবস্থিত ফিলিস্তিন অধিকার করে ইংলন্ড।
ইতিমধ্যে ১৯১৬ সালে জায়নবাদীরা বৃটিশ সরকারের কাছে আবেদন করেছিল প্যালেস্টাইনে তাদের জন্য একটি আবাসভুমির জন্য। ১৯১৭ সনের ২রা নভেম্বর বিজয়ী বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যালফুর ঘোষণা দেন যে, প্যালেস্টাইনে ইহুদীদের জন্য একটি আবাস স্থাপনের বিষয়টি ইংল্যান্ড বিবেচনা করছে।৭ অথচ সে সময়ে (উনিশ শ’ আঠারো সালে) প্যালেস্টাইনে আরব (মুসলিম) ছিল প্রায় সাড়ে ছয় লক্ষ, আর ইহুদী মাত্র ছাপ্পান্ন হাজার।৮ ১৯১৭ সালে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণার পর ইহুদীগণের প্যালেস্টাইন আগমন বেগবান হয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর লীগ অব নেশন্স গঠিত হয়। পরাশক্তির ক্রীড়নক এই লীগ অব নেশন্স ১৯২২ সালে বৃটেনকে প্যলেস্টাইন শাসনের ম্যান্ডেট দেয়। ফিলিস্তিন চেয়েছিল তুর্কীর নিয়ন্ত্রণ থেকে স্বাধীনতা, পেলো বৃটিশের শৃঙ্খল। যুক্তরাষ্ট্রও ইহুদীদের জন্য প্যালেস্টাইনে আবাসভুমির দাবী করে। জায়নবাদীরা ঠিক করে তারা প্যালেস্টাইনে যত বেশি সম্ভব আরবদের (মুসলিমদের) জমি নগদ টাকায় কিনে নেবে এবং অন্য দেশের ইহুদীদের এনে বসতি স্থাপন করাবে।৯।১৯৩৫ সাল নাগাদ প্যালেস্টাইনে ইহুদী জনসংখ্যা দাড়ায় তিন লাখের অধিক।৯ তবে তখনও তা মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও কম। ইহুদীগণ ফিলিস্তিনী আরবদের উৎখাত কর্মসুচী শুর করে। প্যালেস্টইনী আরবগণও বৃটিশ ও ইহুদী বিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলন শুরু করে। দখলদার বৃটিশ সরকার একটি কমিশন গঠন করে। সেই কমিশন ফিলিস্তিনকে দুই ভাগ করার সুপারিশ করে (১৯৩৬)। প্যালেস্টনীয় আরবগণ বিদ্রোহে ফেটে পড়ে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুেদ্ধর আগে থেকেই জার্মানী, পোলান্ড, অস্ট্রিয়া সর্বত্র ইহুদীদের উপর কথিত অমানুষিক নির্যাতন চলে। প্যালেস্টাইনে ইহুদী আগমনও বৃদ্ধি পায়। আরব-ইহুদী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৪৭ নাগাদ বৃটিশগণ প্যালেস্টাইন ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্যালেস্টাইন সমস্যাকে জাতিসংঘে পেশ করে। ১৯৩৬ সালে বৃটিশ কমিশন যেমন ফিলিস্তিনকে দু’ভাগ করার কথা বলেছিল, জাতিসঙ্ঘ ঠিক তা’ই করলো। ১৯৪৭ সালের জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাব (রিজলুশন) অনুযায়ী ইহুদীদের জন্য প্যালেস্টাইনের ছাপ্পান্ন শতাংশ জমি নিয়ে ইসরাইল রাষ্ট্র আর বাকী তেতাল্লিশ শতাংশ জমি দেয় হলো মূল আরব অধিবাসী (ফিলিস্তিনি মুসলিমদের)দের; অথচ ফিলিস্তিনিগণ তখনো প্রায় পচানব্বই শতাংশ জমির মালিক ও দখলকার ছিল১০; জেরুশালেম শহর এবং বেথেলহেম আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণে রাখা হোলো। এই বন্টন আরবগণ মেনে নিতে পারে নি। ইহুদীগণ বিদেশী, তারা মাত্র পাচ ছয় শতাংশ জমির মালিক, তারা জনসংখ্যার মাত্র এক তৃতীয়াংশ। সেই ইহুদীদের জন্য রাষ্ট্র মালিকানা বরাদ্দ করা হোলো। মানুষের অধিকার নিয়ে এমন নির্মম পরিহাস পৃথিবীর ইতিহাসে আর আছে কি না জানা নেই।ইহুদীরা নিজেদের অবস্থান, নিরাপত্তা ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জোরদার করার উদ্দেশ্যে ফিলিস্তিন থেকে আরব মুসলিমদের বহিস্কারের জন্য তৎপর হয়ে উঠলো। তারা জোর করে মুসলিম বসতি ও গ্রাম দখল করে। অত্যাচারে টিকতে না পেরে ১৯৪৭ এর ২৯ শে নভেম্বর (জাতিসংঘ কর্তৃক ফিলিস্তিনে ইহুদিী রা®ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণার দিন) থেকে ১৯৪৮ এর ১৫ই মে পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসে প্রায় চার লক্ষ ফিলিস্তিনি মুসলিম পার্শ্ববর্তী আরব মুসলিম দেশ সমূহে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। প্রসঙ্গত: যে, তুর্কী সাম্রাজ্যের পতনের পর ইরাক, হেজাজ (আরব), সিরিয়িা, জর্দান, লিবিয়া স্বাধীনতা অর্জন করে। ১৯৪৮ সালের ১৪ই মে বৃটেন ফিলিস্তিনে তার উপস্থিতির ইতি ঘোষণা করে এবং ঐ দিনই ওয়াইজম্যান ফিলিস্তিনে প্রথম ইহুদি রাষ্ট্র গঠন করেন। তারা তাদের রাষ্ট্রের নাম রাখে ইসরায়েল।
যে দিন ইসরায়েল রাষ্ট্র ঘোষিত হয় (১৪ই মে ১৯৪৮) সেই দিনই নিরুপায় মুসলিম রাষ্ট্রসমূহ (মিসর এবং সদ্য-স্বাধীনতা-প্রাপ্ত সিরিয়া, জর্দন, লেবানন) ফিলিস্তিনে প্রবেশ করে। হিতে বিপরীত হয়। ইঙ্গ-মার্কিন মদদ-পুষ্ট ইসরাইল তার প্রচন্ড সামরিক শক্তি বলে ১৯৪৯ সালের মধ্যে ফিলিস্তিনের শতকার ৭৫ ভাগ এলাকা নিজের দখলে নিয়ে নেয়। জর্দন নদীর পশ্চিম তীরে কিছু এলাকা এবং দক্ষিণ অঞ্চলে গাজা এলাকা ছাড়া গোটা ফিলিস্তিনই তারা দখল করে নেয়, গোটা ফিলিস্তিনের ৭৫ শতাংশ অঞ্চল। জাতিসংঘ যেখানে ৫৬ শতাংশ দিয়েছিল আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ইসরাইল পেয়ে গেল ৭৫ শতাংশ এলাকা। যেটুকু আরবরা পেল তার মধ্যে জর্দন নদীর পশ্চিম তীরের অঞ্চলটুকু নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিলো জর্দান এবং গাজা অঞ্চল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিলো মিসর। জর্দান নদীর পশ্চিম তীর এবং গাজার মধ্যবর্তী প্রায় এক শ’ কিলোমিটার অঞ্চল রয়ে গেল ইসরায়েলের।
১৯৬৭ সনে মিসর সিরিয়া ও জর্দনের সাথে পুনরায় ইসরায়েলের যুদ্ধ হয়। এবারও ইসরায়েল প্রচুর সুবিধা অর্জন করে। তারা এবার পশ্চিম তীর ও গাজাও দখল করে নিয়ে সম্পূর্ণ প্যালেস্টাইনকেই ইসরায়েল বানিয়ে ফেলে। ইহুদী খৃস্টান মুসলিম সকলের পবিত্রভুমি জেরুশালেম (যা ইতিপূর্বে জাতিসঙ্ঘের নিয়ন্ত্রণে ছিল তা-ও) ইহুদীদেও নিয়ন্ত্রণে চলে গেল। বিশ্বের মুসলমানের পবিত্র ভূমি জেরুশালেমে মুসলমানদের প্রবেশাধিকার রুদ্ধ হয়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বেশি বেশি ইহুদীগণ এসে ইসরায়েলে বসতি স্থাপন করতে থাকে।
১৯৬৭এর যুদ্ধের পর এক অভাবিতপূর্ব মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। ইসরায়েল মূল বাসিন্দা মুসলিমদের দমন ও বিতাড়নে বলপ্রয়োগ ও নৃশংতা অবলম্বন করে। বোমা হামলা, অগ্নিসংযোগ, মুসলিম গ্রাম জ¦ালিয়ে দেওয়া, মুসলিমগণকে বন্দী করা, বন্দী নিপীড়ন, হত্যা সব রকম পন্থা অবলম্বন করে। প্যালেস্টাইনের মুসলিম জনগণ অধিক হারে দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়। যারা দেশ ত্যাগ করে নি তাদের অনেককে বন্দী শিবির বা উদ্বাস্তু শিবিরে থাকতে হয়। দু’ দু’ বার সম্মিলিত সামরিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। অগত্যা ফিলিস্তিনের জনগণ নিজেদের অবস্থান টিকিয়ে রাখার জন্য ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরেই সংগঠিত হতে থাকে। ১৯৬৩ সনে ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে ’আল-ফাত্তাহ’ নামক সংস্থা গঠিত হয়। গেরিলা তৎপরতা ছাড়া তাদের উপায় ছিল না। আল ফাত্তা ছাড়া আরো কিছু গেরিলা সংগঠন গড়ে ওঠে। এদের সমন্বয়ে প্যালেস্টাইন মুক্তি সংস্থা (পি.এল.ও) সৃষ্টি হয়। ইসরাইলের কবল থেকে গোটা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা অর্জন ছিল পি এল ওর লক্ষ্য।
ফিলিস্তিনি জনগণ ১৯৮৭ সালে গণ-অভ্যুত্থান (ইনতিফাদা) শুরু করে। অভ্যুত্থান দমনে ইসরায়েল সকল প্রকার বল প্রয়োগ করে, আন্দোলনকারীদের হত্যা ও জখম করে। ১৯৯০ সালে আল আকসা মসজিদের কাছে ২২ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। ইসরাইল সরকার পি এল ওর সাথে আলোচনায় বসে এবং একটি সমঝোতায় উপনীত হয় (১৯৯৩ – ১৯৯৫)। পি এল ও ইসরায়েল রাষ্ট্রকে স্বীকার করে নেয়, এবং ইসরাইল সরকার পি এল ওকে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে স্বীকার করে, তবে ফিলিস্তিনকে (অর্থাৎ পশ্চিম তীর ও গাজা মিলে যেটুকু ফিলিস্তিন, তাকে) ইসরাইল থেকে পৃথক কোনো কিছু বলে স্বীকৃতি দেয় নি ইসরায়েল। তবু এই সমঝোতার ফলে প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল অথরিটি গঠিত হয়, যারা গাজা ও পশ্চিম তীরে কিছু বেসামরিক প্রশাসনিক কর্তৃত্ব করতে পারে। প্যালেস্টাইন অথরিটি নিজেদের জন্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে থাকে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবির্ভূত হয় হামাস।
২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনি জনগণ দ্বিতীয় গণ-অভুত্থান সংঘটিত করে – ইসরাইলি স্থাপনায় ’সুইসাইড বম্বিং’ অপারেশন চালায় – জেনেশুনে নিজের জীবন উৎসর্গ করে। ক্রমবর্ধমান ইহুদী বসতি-বিস্তার থেকে নিজেদের আবাসস্থল রক্ষার শপথে বলিয়ান হয় ফিলিস্তিনি যুব শক্তি সুইসাইড বম্বারে পরিণত হয়। মানুষ কতটা মরিয়া হয়ে গেলে এমন আত্মহননের সিদ্ধান্ত নিতে পারে! অবশেষে ২০০৫ সালে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী গাজা থেকে ইহুদী বসতি-স্থাপনকারীদের সরিয়ে নেবার আশ্¦াস দেন এবং গাজায় ইহুদি নিয়ন্ত্রণের অবসানের ঘোষণা দেন (তবে গাজাকে কোনো স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেন নি)। ২০০৭ সালে হামাস (যারা প্যালেস্টাইন পার্লামেন্ট ৪৪ শতাংস আসনের নির্বাচনে জয়ী) গাজার প্রশাসন গ্রহণ করে। ২০১১ সালে প্যালেস্টাইন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে জাতি সংঘের সদস্য হতে চায়। ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয় নি; যদিও ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ প্রস্তাবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন দু’টি রাষ্ট্রের কথা ছিল।
২০২৩ সালের আগস্টে প্রায় এক হাজার ফিলিস্তিনিকে বিনা বিচারে আটক রাখে ইসরায়েল। ইসরাইলের অভিযোগ এই যে, ৭ই অক্টোবর ২০২৩ হামাস অতর্কিতে ইসরায়েলি সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনার উপর হামলা চালিয়ে হতাহাতের ঘটনা ঘটায় এবং প্রায় আড়াইশো ইসরাইলি ও বিদেশীকে জিম্মি করে। এই অযুহাতে অক্টোবর ২০২৩ থেকে, গত দেড় বছর ধরে, ইসরায়েল এক নাগাড়ে গাজায় বর্বরতা চালাচ্ছে। তারা গাজায় স্মরণকালের ভয়াবহতম বোমা হামলা চালায়, তাদের উদ্দেশ্য গাজা উপত্যকাকে ধ্বংস করা। ৭ই অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে গাজায় প্রায় ষাট হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে যার মধ্যে শতকরা আশি জনই সাধারণ নাগরিক, অর্ধেকেরও বেশী নারী ও শিশু। প্রতিদিন অসহায় শিশুর ক্রন্দনে আকাশ ভারী হচ্ছে, নারীর আর্তনাদে বাতাস বিষাদিত হচ্ছে। ইসরায়েলগণ নির্বিচারে ঘরবাড়ী ধ্বংস করছে; স্কুল কলেজ, হাসপাতাল, গাছ পালা রাস্তাঘাট সব কিছু ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে, এমনকি গোরস্তানও বাদ যায় নি। বোমার আঘাতে হাসপাতাল পুড়ে গেছে। শিশু হাসপাতালে সরাসরি আক্রমণ চলেছে। ইসরায়েলি ট্যাংক হাসপাতাল গুড়িয়ে দিয়েছে। ধ্বংসপ্রাপ্ত দালানকোঠার নীচে কত হাজার মৃতদেহ আছে তার হিসাব নেই, অনবরত বোমা হামলায় স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানসমূহও অকেজো হয়ে গেছে। যে অমানবিক ধ্বংসযজ্ঞের স্বীকার গাজায় ফিলিস্তিনিরা হয়েছে তা কোনো সভ্য পৃথিবীর পরিচয় বহন করে না। দুর্ভিক্ষে প্রপীড়িত এ দেশে অভুক্ত আহত শিশুদের আর্ত চিৎকারে আকাশ বাতাস ভেসে যাচ্ছে। পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ধ্বংসযজ্ঞের তলায় বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্ভিক্ষের অনাহারে, খাদ্য পানীয়ের অভাবে মানুষ মরছে। সভ্য সমাজের কোনো নিয়মনীতি রক্ষা করা হয় নি। এই কর্মকান্ডে ইসরায়েল সমর্থন পেয়েছে তার চিরসাথী যুক্তরাষ্ট্রের। সভ্য পৃথিবী তাকিয়ে দেখছে।
পৃথিবীর জন্য এটি নতুন কিছু নয়। বোসনিয়ায় যখন মুসলিম জনগণকে জীবন্ত দাহ করে জ¦লন্ত অঙ্গারে পরিণত করা হয়েছে, সারা বিশ্ব তাকিয়ে দেখেছে; যখন ধ্বংস জজ্ঞ সম্পন্ন-প্রায় তখন বিশ্বশক্তির টনক নড়েছে। হামাসের ক্ষেত্রে তারও কোনো লক্ষণ নেইা। সমগ্র গাজা অঞ্চল সমতল ভুমিতে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনকে রক্ষা করার মতো শক্তি দৃশ্যমান নয়। আরবদের শক্তি নাই – তা দু’বার প্রমাণ হয়েছে, দু’বার তারা পরাজয়ের মাশুল দিয়েছে; এবার তারা নিষ্ক্রিয়। এবার কোনো আরব দেশ তার সাহয়তায় সৈন্য বা রসদ প্রেরণ করে নি, কোনো উল্লেখযোগ্য উচ্চবাচ্যও করে নি। এ ভয়াবহতা থামাবার জন্য পরাশক্তি তেমন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় নি।
বিশ্বে প্রতিবাদ হচ্ছে। সশস্ত্র আক্রমণকে নিরস্ত্র প্রতিবাদ দিয়ে প্রতিরোধ করা যায় না। যুগে যুগে বিভিন্ন মুক্তিকামী দেশে বাইরের থেকে স্বেচ্ছাসেবী এসে মুক্তিসংগ্রামকে সফল করেছে। গাজার ক্ষেত্রে সে সম্ভাবনাও নেই। বিধাতা পুরুষ যদি সদয় হন, ফিলিস্তিনিদের আর্তনাদে যদি তার করুণা হয়, তবেই কিছু হতে পারে; তা’ ছাড়া ফিলিস্তিনের আশু মুক্তি নেই। ধরিত্রীর রক্তক্ষরণ চলছে, চলবে।
প্রিন্ট/ডাউনলোডঃ ১২ই আগস্ট, ২০২৫, সকাল ১১:৪৪
© স্বত্ব দৈনিক সমধারা ২০২৫
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি