সমধারা

আগস্ট ৩, ২০২৫ , ৯:৩৫ অপরাহ্ণ

পরমাণু বিজ্ঞানী অধ্যাপক শমশের আলীর মৃত্যু

সমধারা ডেস্ক

সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য, পরমাণু বিজ্ঞানী, অধ্যাপক এম শমশের আলী আর নেই।

শনিবার রাত ২টার দিকে ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শোকবার্তায় বলা হয়েছে, রোববার বাদ জোহর ধানমন্ডির ৭ এর বায়তুল আমান মসজিদে শমশের আলীর জানাজা হবে।

তার সম্মানে ও শোক পালনে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে রোববার ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

১৯৪০ সালের ৯ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারায় শমশের আলীর জন্ম। বাবার চাকরির কারণে শৈশবে কিছুদিন কেটেছে ভারতের চব্বিশ পরগনায়। দেশভাগের পর ১৯৪৮ সালে সপরিবারে ফিরে আসেন যশোরে।

যশোর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি এবং রাজশাহী কলেজ থেকে এইএসসি পাস করে শমশের আলী ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পদার্থবিজ্ঞানে ১৯৫৯ সালে অনার্স এবং ১৯৬০ সালে মাস্টার্স করেন।

১৯৬১ সালে পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে শমশের আলীর কর্মজীবন শুরু। পরে উচ্চ শিক্ষার জন্য চলে যান যুক্তরাজ্যে। ১৯৬৫ সালে ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটিতে থিওরেটিক্যাল নিউক্লিয়ার ফিজিক্সে পিএইচডি করেন।

ওই বছর দেশে ফিরে তিনি ঢাকায় আণবিক শক্তি কেন্দ্রে যোগ দেন সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে। ১৯৭০ সালে আণবিক শক্তি কমিশনের পরিচালকের দায়িত্ব পান। সেই দায়িত্বে ছিলেন ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত।

পরে ১৯৮২ সালে অধ্যাপক হিসেবে নিজের পুরনো শিক্ষায়তন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দেন শমশের আলী। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব নেন। সেই দায়িত্ব শেষে আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরেন।

২০০২ সালে বেসরকারি সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার সময়ও তিনি উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সাল পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন।

২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক শমশের আলী। তিনি বাংলা একাডেমির একজন ফেলো এবং বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির আজীবন সদস্য এবং আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির সদস্য ছিলেন।

বিজ্ঞানের পাশাপাশি সাহিত্য এবং সুফি দর্শনে গভীর আগ্রহ ছিল শমশের আলীর। তিনি জালালুদ্দিন রুমিসহ ইসলামিক দর্শন, বিজ্ঞানে মুসলিমদের অবদান নিয়ে লিখেছেন। বিজ্ঞান শিক্ষা, ধর্ম, সাহিত্য, দর্শন নিয়ে বিটিভিতে অনুষ্ঠান করেছেন।

তার লেখা বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘পবিত্র কোরআনে বৈজ্ঞানিক ইঙ্গিত’, ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মুসলিম অবদান’, ‘আলাদিনস রিয়েল ল্যাম্প: সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’।

বিজ্ঞান সাধনায় ভূমিকার জন্য মাদার তেরেসা স্বর্ণপদক, খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ স্বর্ণপদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হরিপ্রসন্ন রায় স্বর্ণপদক, জগদীশচন্দ্র বসু স্বর্ণপদকসহ নানা সম্মাননায় তিনি ভূষিত হয়েছেন।

প্রিন্ট/ডাউনলোডঃ ১২ই আগস্ট, ২০২৫, দুপুর ১২:১৬

© স্বত্ব দৈনিক সমধারা ২০২৫

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

প্রিন্ট করুন

সেভ করুন